Menu |||

আমরা সালমান শাহকে হত্যা করেছি- রিজভী

প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আমেরিকা প্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবি ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে আলোচনার ঝড় তুলেছেন। এ ঘটনায় ফের নতুন করে তার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া।

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের অনেক তারকাও এখন বিষয়টি নিয়ে সরব। সালমান শাহ’র মৃত্যুর দীর্ঘ ২১ বছর পর রহস্য যখন আবারও ঘণীভূত হচ্ছে, নতুন মোড় নিচ্ছে ঠিক তখনই এফডিসি প্রাঙ্গণে তারকাদের মুখেও সালমান প্রসঙ্গে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

 

গত সোমবার ফেসবুকে দেয়া প্রথম ভিডিও বার্তায় রুবি দাবি করেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি, তাকে খুন করা হয়েছিল। আমার স্বামী তার খুনের সঙ্গে জড়িত। এটা সামিরার (সালমান শাহ’র স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজবেন্ডকে দিয়ে, সবাইরে দিয়ে, সব চাইনিজ মানুষ ছিল। সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে। এই খুনের বিষয়ে আমি সব জানি। যেভাবেই হোক আবার যেন মামলা তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। আমি যেমন করেই হোক আদালতে সাক্ষী দেব। এই ভিডিও ফেসবুকে দেয়ার দুইদিন পর বুধবার সকালে আরেকটি ভিডিও দেন রুবি।

যেখানে আগের ভিডিওতে দেয়া বক্তব্য থেকে সরে আসেন রুবি। রুবি দ্বিতীয় ভিডিও বার্তায় বলেন, আমি বলব না যে এটা আত্মহত্যা বা হত্যা। এটা আমার বলা উচিত না। আমি আগেরবার যেটা বলেছি ভিডিওতে সেটাতে আমার ভুল (রং) ছিল। আমি ইমোশনাল ছিলাম বেশি, যার জন্য আমি বলেছিলাম হত্যা। হত্যা নাকি আত্মহত্যা এটা সামিরা এবং তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বের হবে।

ঠিক ২০ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ১৯ জুলাই সালমানের বাবার ডিওএইচএস এর বাসায় রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ নামের এক যুবক হাজির হন। পরে সালমানের বাবা রিজভীকে ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এর ঠিক তিন দিন পর রিজভী আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

রেকর্ড করা সেই জবানবন্দীতে রিজভী বলেন, সালমানকে ঘুমাতে দেখে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, ফারুক পকেট থেকে ক্লোরোফোমের শিশি বের করে এবং সামিরা তা রুমালে দিয়ে সালমানের নাকে চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মামলার তিন নম্বর আসামি আজিজ মোহাম্মদ ভাই এসে সালমানের পা বাঁধে এবং খালি ইনজেকশন পুশ করে। এতে সামিরার মা ও সামিরা সহায়তা করে। পরে ড্রেসিং রুমে থাকা মই নিয়ে এসে, ডনের সাথে আগে থেকেই নিয়ে আসা প্লাস্টিকের দড়ি আজিজ মোহাম্মদ ভাই সিলিং ফ্যানের সাথে ঝোলায়। সালমানকে হত্যা করতে ডন, ডেভিড, ফারুক, জাভেদের সঙ্গে সামিরার মা লাতিফা হক ১২ লাখ টাকার চুক্তি করেন।

চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, সালমানকে শেষ করতে কাজের আগে ৬ লাখ ও কাজের পরে ৬ লাখ দেয়া হবে।

আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেও পরবর্তীতে যখন তদন্তকারী কর্মকর্তা রিজভীকে জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে তখন সে জানায় যে সালমান শাহ হত্যা বিষয়ে সে কিছুই জানে না। রিজভী এখন কোথায় আছে কেমন আছে কেউ বলতে পারছে না। সম্প্রতি রিজভীর দেয়া এই জবানবন্দি ভাইরাল হয়েছে।

এদিকে আজ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের এক গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে  রাবেয়া সুলতানা রুবি বলেছেন,আমাকে মানসিক রোগী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে কিন্তু প্রমাণ করে দেখাক তো। আমাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে হত্যা করা হবে। আমাকে মেরে ফেলা হবে, তারপর বলা হবে আমি সুইসাইড করেছি। আর জীবন রক্ষার জন্য আমি পূর্বের বক্তব্য প্রত্যাহার করে পরের ভিডিওগুলো করি। মৃত্যুর আশঙ্কায় আমি স্বামীর বাসা ছেড়েছি।

রুবির ভাষ্যমতে, ‘স্বামীর বাসা ফিলাডেলফিয়াতে তিনি আর ফিরবেন না, সেখানে এখন আর তার নিরাপত্তা নেই। গেলেই মেরে ফেলতে পারে। তিনি জানান শিখা নামের একজন নিউ ইয়র্কে তাকে আশ্রয় দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ফিলাডেলফিয়াতে আমাকে আইসোলেটেড করে রাখা হয়েছিল মানসিক ভারসাম্যহীন করে রাখা হয়েছিল। আমি ডিপ্রেশনে ছিলাম ২০১১ সাল পর্যন্ত, কিন্তু কখনোই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলাম না। এজন্যই গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে রুবি প্রথম দেওয়া ভিডিওর মতোই ফের হত্যা সম্পর্কিত কথাগুলো বলেন।

অসংখ্য ভিডিও দিয়ে কেন বিভ্রান্ত করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি স্বামীর চাপে পড়েই সেসব কথা বলি। আমি প্রথম ভিডিও দেওয়ার পরে আমাকে বাসায় নিয়ে যায় আমার স্বামী। পরে তিনি আমাকে বলে আরেকটা ভিডিওতে বলে দিতে ‘তুমি মানসিক ভারসাম্যহীন,’ যা বলেছ ভুল বলেছে। কিন্তু এরপর বুঝি সত্যিই তারা আমাকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্ল্যান করছে। এমনকী মেরে ফেলার চিন্তাও করছে। কিন্তু যে বাসা ছেড়েছি, সে বাসায় ফিরবো না। ওখানে আমার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে, আমাকে মেরে ফেলা হতে পারে।

তিনি নিরাপত্তা পেলে বাংলাদেশের তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবেন। এ বিষয়ে রুবি বলেন, আমি ৮ নম্বর আসামি আমি জানি না আমাকে কীভাবে ফাঁসানো হবে। যে দেশে ২১ বছরেও একটি হত্যার বিচার হয় না, সেখানে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবো এটাই স্বাভাবিক। তবে পুরো নিরাপত্তা পেলে আমি তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে যা জানি শুরু থেকে সব বলবো।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সালমান শাহ অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার শেষ দৃশ্যের মতো তাঁর জীবনের রথও থেমে গিয়েছিল ওই ছবি করার ঠিক চার বছর পর ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশকে জানান তার স্ত্রী সামিরা। কিন্তু তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে।

সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর অভিযোগ ছিল তারা হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটিকে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। পুলিশ বলেছিল, অপমৃত্যুর মামলা তদন্তের সময় যদি বেরিয়ে আসে যে এটি হত্যাকাণ্ড, তাহলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হত্যা মামলায় মোড় নেবে।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নায়কের আকস্মিক মৃত্যুতে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুরো দেশ। সে সময় সারা দেশজুড়ে সালমানের অসংখ্য ভক্ত তাঁর মৃত্যু মেনে নিতে না পারায় বেশ কয়েকজন তরুণী আত্মহত্যা করেন বলেও খবর আসে পত্রিকায়। সালমানের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে না পারায় তাঁর ভক্তদের মাঝে তৈরি হয় নানা প্রশ্নের।

কোথায় আছেন আলোচিত সামিরা?

সামিরার বাবা জাতীয় দলের সাবেক উইকেটকিপার-অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা। মা থাইল্যান্ডের নাগরিক চট্টগ্রামের বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী লুসি।

মাত্র ২১ বছর বয়সে মা নীলা চৌধুরীর বান্ধবীর মেয়ে সামিরাকে বিয়ে করেন সালমান শাহ। বিয়ের পর বেশ ভালোভাবেই তাদের সংসার জীবন কাটছিল। মায়ের মতো সামিরাও বিউটি পার্লারের কাজে বেশ আগ্রহী ছিলেন এবং ঢাকায় একটি বিউটি পার্লারও খুলেছিলেন সামিরা।

তবে এক সময় সালমান-শাবনুর জুটিকে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে-বাইরে কানাঘুষা শুরু হয়। আর এতে করে সালমানের সঙ্গে সামিরার মনোমালিন্য ঘটতে থাকে।

এরপর সালমানের মৃত্যু হলে তার মা নীলা চৌধুরী অভিযোগ করেন, সামিরার সঙ্গে বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এবং এ দু’জন মিলে সালমানকে হত্যা করেছে।

সে সময় সামিরাও পাল্টা অভিযোগ করেন, নীলা চৌধুরীই আজিজ ভাইসহ অনেক পুরুষকে তার বাড়িতে নিয়ে আসত এবং এটা নিয়ে সালমান ও তার বাবা নীলার উপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। এছাড়া সামিরা পুরো ঘটনার জন্য সালমান-শাবনুরের প্রেমকেও দায়ী করেন।
বাবা-মা, স্বামী, বোন ও পরিবারের অন্যন্য সদস্যদের সঙ্গে সামিরা

এক পর্যায়ে একেবারে আড়ালে চলে যান সামিরা। সালমানের মৃত্যুর কয়েক বছর পর ব্যবসায়ী মুস্তাক ওয়াইজকে বিয়ে করেন তিনি। দ্বিতীয় বিয়ের পর দেশ ছেড়ে চলে যান থাইল্যান্ড। সেখানে সামিরার নতুন সংসারে একটি ছেলে ও দুটি মেয়ে।

থাইল্যান্ডে সামিরার ছোট দুই বোন ফাহরিয়া হক ও হুনায়জা শেখ তাদের স্বামী সন্তান নিয়ে বাস করেন।

জানা গেছে, সামিরা বাংলাদেশে তেমন আসেন না বললেই চলে। আসলেও শুধু নিকট আত্মীয়দের সঙ্গেই দেখা করেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সুদানে বর তার বন্ধুদের চাবুক মারার সংস্কৃতি

» অসুস্থ প্রবাসী, হাসপাতালে ১বছর ছয়  মাস,সেবকের ভূমিকায় সাংবাদিক মহসিন

»

» যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

» কাতার পুলিশ কলেজের সপ্তম স্নাতক প্রদানে আমির শেখ তামিম

» বাংলাদেশ দূতাবাস কুয়েতের “বিজ্ঞপ্তি”

» কাতারে প্রীতি ফুটবল টুনামেন্ট এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

» পুলিশ, র‍্যাব ও আনসারদের কারা কোন পোশাক পেলেন?

» “কুয়েতে শীতের ৫ মাস” তাবু ঘরের গল্প

» ১৯ সন্তানের মা হয়েও পিএইচডি করলেন সৌদি নারী!

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

আমরা সালমান শাহকে হত্যা করেছি- রিজভী

প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আমেরিকা প্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবি ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে আলোচনার ঝড় তুলেছেন। এ ঘটনায় ফের নতুন করে তার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া।

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের অনেক তারকাও এখন বিষয়টি নিয়ে সরব। সালমান শাহ’র মৃত্যুর দীর্ঘ ২১ বছর পর রহস্য যখন আবারও ঘণীভূত হচ্ছে, নতুন মোড় নিচ্ছে ঠিক তখনই এফডিসি প্রাঙ্গণে তারকাদের মুখেও সালমান প্রসঙ্গে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

 

গত সোমবার ফেসবুকে দেয়া প্রথম ভিডিও বার্তায় রুবি দাবি করেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি, তাকে খুন করা হয়েছিল। আমার স্বামী তার খুনের সঙ্গে জড়িত। এটা সামিরার (সালমান শাহ’র স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজবেন্ডকে দিয়ে, সবাইরে দিয়ে, সব চাইনিজ মানুষ ছিল। সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে। এই খুনের বিষয়ে আমি সব জানি। যেভাবেই হোক আবার যেন মামলা তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। আমি যেমন করেই হোক আদালতে সাক্ষী দেব। এই ভিডিও ফেসবুকে দেয়ার দুইদিন পর বুধবার সকালে আরেকটি ভিডিও দেন রুবি।

যেখানে আগের ভিডিওতে দেয়া বক্তব্য থেকে সরে আসেন রুবি। রুবি দ্বিতীয় ভিডিও বার্তায় বলেন, আমি বলব না যে এটা আত্মহত্যা বা হত্যা। এটা আমার বলা উচিত না। আমি আগেরবার যেটা বলেছি ভিডিওতে সেটাতে আমার ভুল (রং) ছিল। আমি ইমোশনাল ছিলাম বেশি, যার জন্য আমি বলেছিলাম হত্যা। হত্যা নাকি আত্মহত্যা এটা সামিরা এবং তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বের হবে।

ঠিক ২০ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ১৯ জুলাই সালমানের বাবার ডিওএইচএস এর বাসায় রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ নামের এক যুবক হাজির হন। পরে সালমানের বাবা রিজভীকে ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এর ঠিক তিন দিন পর রিজভী আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

রেকর্ড করা সেই জবানবন্দীতে রিজভী বলেন, সালমানকে ঘুমাতে দেখে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, ফারুক পকেট থেকে ক্লোরোফোমের শিশি বের করে এবং সামিরা তা রুমালে দিয়ে সালমানের নাকে চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মামলার তিন নম্বর আসামি আজিজ মোহাম্মদ ভাই এসে সালমানের পা বাঁধে এবং খালি ইনজেকশন পুশ করে। এতে সামিরার মা ও সামিরা সহায়তা করে। পরে ড্রেসিং রুমে থাকা মই নিয়ে এসে, ডনের সাথে আগে থেকেই নিয়ে আসা প্লাস্টিকের দড়ি আজিজ মোহাম্মদ ভাই সিলিং ফ্যানের সাথে ঝোলায়। সালমানকে হত্যা করতে ডন, ডেভিড, ফারুক, জাভেদের সঙ্গে সামিরার মা লাতিফা হক ১২ লাখ টাকার চুক্তি করেন।

চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, সালমানকে শেষ করতে কাজের আগে ৬ লাখ ও কাজের পরে ৬ লাখ দেয়া হবে।

আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেও পরবর্তীতে যখন তদন্তকারী কর্মকর্তা রিজভীকে জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে তখন সে জানায় যে সালমান শাহ হত্যা বিষয়ে সে কিছুই জানে না। রিজভী এখন কোথায় আছে কেমন আছে কেউ বলতে পারছে না। সম্প্রতি রিজভীর দেয়া এই জবানবন্দি ভাইরাল হয়েছে।

এদিকে আজ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের এক গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে  রাবেয়া সুলতানা রুবি বলেছেন,আমাকে মানসিক রোগী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে কিন্তু প্রমাণ করে দেখাক তো। আমাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে হত্যা করা হবে। আমাকে মেরে ফেলা হবে, তারপর বলা হবে আমি সুইসাইড করেছি। আর জীবন রক্ষার জন্য আমি পূর্বের বক্তব্য প্রত্যাহার করে পরের ভিডিওগুলো করি। মৃত্যুর আশঙ্কায় আমি স্বামীর বাসা ছেড়েছি।

রুবির ভাষ্যমতে, ‘স্বামীর বাসা ফিলাডেলফিয়াতে তিনি আর ফিরবেন না, সেখানে এখন আর তার নিরাপত্তা নেই। গেলেই মেরে ফেলতে পারে। তিনি জানান শিখা নামের একজন নিউ ইয়র্কে তাকে আশ্রয় দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ফিলাডেলফিয়াতে আমাকে আইসোলেটেড করে রাখা হয়েছিল মানসিক ভারসাম্যহীন করে রাখা হয়েছিল। আমি ডিপ্রেশনে ছিলাম ২০১১ সাল পর্যন্ত, কিন্তু কখনোই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলাম না। এজন্যই গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে রুবি প্রথম দেওয়া ভিডিওর মতোই ফের হত্যা সম্পর্কিত কথাগুলো বলেন।

অসংখ্য ভিডিও দিয়ে কেন বিভ্রান্ত করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি স্বামীর চাপে পড়েই সেসব কথা বলি। আমি প্রথম ভিডিও দেওয়ার পরে আমাকে বাসায় নিয়ে যায় আমার স্বামী। পরে তিনি আমাকে বলে আরেকটা ভিডিওতে বলে দিতে ‘তুমি মানসিক ভারসাম্যহীন,’ যা বলেছ ভুল বলেছে। কিন্তু এরপর বুঝি সত্যিই তারা আমাকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্ল্যান করছে। এমনকী মেরে ফেলার চিন্তাও করছে। কিন্তু যে বাসা ছেড়েছি, সে বাসায় ফিরবো না। ওখানে আমার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে, আমাকে মেরে ফেলা হতে পারে।

তিনি নিরাপত্তা পেলে বাংলাদেশের তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবেন। এ বিষয়ে রুবি বলেন, আমি ৮ নম্বর আসামি আমি জানি না আমাকে কীভাবে ফাঁসানো হবে। যে দেশে ২১ বছরেও একটি হত্যার বিচার হয় না, সেখানে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবো এটাই স্বাভাবিক। তবে পুরো নিরাপত্তা পেলে আমি তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে যা জানি শুরু থেকে সব বলবো।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সালমান শাহ অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার শেষ দৃশ্যের মতো তাঁর জীবনের রথও থেমে গিয়েছিল ওই ছবি করার ঠিক চার বছর পর ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশকে জানান তার স্ত্রী সামিরা। কিন্তু তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে।

সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর অভিযোগ ছিল তারা হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটিকে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। পুলিশ বলেছিল, অপমৃত্যুর মামলা তদন্তের সময় যদি বেরিয়ে আসে যে এটি হত্যাকাণ্ড, তাহলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হত্যা মামলায় মোড় নেবে।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নায়কের আকস্মিক মৃত্যুতে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুরো দেশ। সে সময় সারা দেশজুড়ে সালমানের অসংখ্য ভক্ত তাঁর মৃত্যু মেনে নিতে না পারায় বেশ কয়েকজন তরুণী আত্মহত্যা করেন বলেও খবর আসে পত্রিকায়। সালমানের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে না পারায় তাঁর ভক্তদের মাঝে তৈরি হয় নানা প্রশ্নের।

কোথায় আছেন আলোচিত সামিরা?

সামিরার বাবা জাতীয় দলের সাবেক উইকেটকিপার-অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা। মা থাইল্যান্ডের নাগরিক চট্টগ্রামের বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী লুসি।

মাত্র ২১ বছর বয়সে মা নীলা চৌধুরীর বান্ধবীর মেয়ে সামিরাকে বিয়ে করেন সালমান শাহ। বিয়ের পর বেশ ভালোভাবেই তাদের সংসার জীবন কাটছিল। মায়ের মতো সামিরাও বিউটি পার্লারের কাজে বেশ আগ্রহী ছিলেন এবং ঢাকায় একটি বিউটি পার্লারও খুলেছিলেন সামিরা।

তবে এক সময় সালমান-শাবনুর জুটিকে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে-বাইরে কানাঘুষা শুরু হয়। আর এতে করে সালমানের সঙ্গে সামিরার মনোমালিন্য ঘটতে থাকে।

এরপর সালমানের মৃত্যু হলে তার মা নীলা চৌধুরী অভিযোগ করেন, সামিরার সঙ্গে বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এবং এ দু’জন মিলে সালমানকে হত্যা করেছে।

সে সময় সামিরাও পাল্টা অভিযোগ করেন, নীলা চৌধুরীই আজিজ ভাইসহ অনেক পুরুষকে তার বাড়িতে নিয়ে আসত এবং এটা নিয়ে সালমান ও তার বাবা নীলার উপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। এছাড়া সামিরা পুরো ঘটনার জন্য সালমান-শাবনুরের প্রেমকেও দায়ী করেন।
বাবা-মা, স্বামী, বোন ও পরিবারের অন্যন্য সদস্যদের সঙ্গে সামিরা

এক পর্যায়ে একেবারে আড়ালে চলে যান সামিরা। সালমানের মৃত্যুর কয়েক বছর পর ব্যবসায়ী মুস্তাক ওয়াইজকে বিয়ে করেন তিনি। দ্বিতীয় বিয়ের পর দেশ ছেড়ে চলে যান থাইল্যান্ড। সেখানে সামিরার নতুন সংসারে একটি ছেলে ও দুটি মেয়ে।

থাইল্যান্ডে সামিরার ছোট দুই বোন ফাহরিয়া হক ও হুনায়জা শেখ তাদের স্বামী সন্তান নিয়ে বাস করেন।

জানা গেছে, সামিরা বাংলাদেশে তেমন আসেন না বললেই চলে। আসলেও শুধু নিকট আত্মীয়দের সঙ্গেই দেখা করেন।

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 30 Jan.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।